
নানা প্রজাতির গাছপালায় সমৃদ্ধ দেশের শিল্পোন্নত জেলা গাজীপুর। এসব গাছের যেমন রয়েছে ভেষজ গুণ, তেমনি আছে নানা উপকারিতা। নান্দনিক দৃষ্টিভঙ্গি, প্রকৃতিপ্রেম এ অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর মজ্জাগত, গাজীপুরের হৃতগৌরব ভাওয়াল রাজারাও তেমনি নিসর্গপ্রেমী ছিলেন। তাদের নিসর্গ প্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ভাওয়াল রাজবাড়ির ভেতর লাগানো নাগলিঙ্গম গাছ।
ভাওয়াল রাজবাড়ির (বর্তমানে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়) ভেতরে ঢুকে দৃশ্যমান দৃষ্টিনন্দন শতবর্ষী এ গাছটি যে কারো দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। রাজবাড়ির প্রাচীরের মধ্যে জেলা প্রশাসকের দপ্তরের ঠিক পশ্চিমে সরকারি কর্মচারী সমিতির অফিস ঘেঁষে শতাব্দীর প্রাচীন এ গাছটি আজও কালের সাক্ষী হয়ে ভাওয়াল রাজাদের স্মৃতি প্রকাশ করেছে।
উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, গাছটিকে কেউ কেউ শিবলিঙ্গমও বলে থাকেন। ইংরেজিতে এর নাম Canonball বৈজ্ঞানিক নাম Couroupita guinensis গোত্র Lacythidacea. ফুলের রঙ লাল, গোলাপি আর হলুদ মিশ্রিত। আকারে বড়। পাপড়ি ছয়টি এবং তুলনামূলক ভারি। ফুলের মধ্যভাগে রয়েছে গর্ভাশয়। গর্ভাশয়টি সাপের ফণার মতো দেখতে। এর জন্যই হয়তো ফুলটির নাম ‘নাগলিঙ্গম’।
ফুল শুকিয়ে গেলে তাতে গোলাকৃতির বাদামি-খয়েরি বর্ণের ফল হয়। পত্র দীর্ঘ ও প্রশস্ত, বাকল ধূসর অমসৃণ। প্রায় সারা বছর পাতা ঝরলেও পুরোপুরি পত্রহীন হয় না কখনও। পুরো গ্রীষ্মকাল ফুল ফোটার সময়, বর্ষা ও শরতে কম ফুটলেও সারা বছরই ফুল থাকে। ফুল- দীর্ঘ, একটায় অসংখ্য কলি। নাগ ফণার মতো উদ্যত, বাঁকানো। ঠিক যেন সাপের ফণা। ফল সাদাটে মাংসল, বহুজীবী, সহজে চারা হয়, তবে বৃদ্ধি মন্থর। এই ফল হাতির পেটের রোগের জন্য উপকারী। এর অন্য নাম হাতির জোলাপ।
রাজবাড়ি ঘুরে দেখা গেছে, নাগলিঙ্গম গাছে ফুটেছে শত শত ফুল। অপরূপ সৌন্দর্য্যের পাশাপাশি সুগন্ধ ছড়াচ্ছে ফুলগুলো। এদেশে নাগলিঙ্গম গাছের দেখা খুব বেশি মেলে না। দেশে মাত্র ৫০-৫২টি এই প্রজাতির গাছ রয়েছে। প্রতি বছর মার্চ থেকে জুলাই মাসে নাগলিঙ্গম ফুল ফোটে। গাছের কাণ্ড থেকে শিকড়ের মতো বের হয়। সেই শিকড়ে ফুল ফোটে। একটি শিকড়ে অনেকগুলো ফুল থাকে। ফুলে ফুলে গাছের কাণ্ড আচ্ছাদিত হয়ে যায়।
গাছটির বয়স কত, তার সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও অনেকের মতে, এটি ভাওয়াল রাজাদের আমলে রোপণ করা। তাদের যুক্তি, গাছটির ফল যেহেতু হাতির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় এবং গাছটির অবস্থান রাজবাড়ীতে, তাই এটি ভাওয়াল রাজাদের আমলের। কারণ ভাওয়াল রাজাদের হাতি ছিল।
সুনির্দিষ্টভাবে বলা না গেলেও গাছটি অন্তত শতাব্দীকাল আগে রোপণ করা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয় প্রবীণদের। সরকারি বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে জেলা ও জেলার বাইরে থেকে অনেকে ভাওয়ালের রাজবাড়ি আসেন। তারা নাগলিঙ্গম গাছ ও এর ফুলে আকৃষ্ট হন। ছায়ার আশ্রয়ে সময় কাটান।
গাজীপুর ভাষা শহীদ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মুকুল কুমার মল্লিক দাঁড়িয়ে থাকা নাগলিঙ্গম গাছটি সম্পর্কে জানান, ভাওয়াল রাজারা প্রকৃতি ও গাছ প্রেমী ছিলেন। তাদের উদ্যোগে কয়েকটি রাজবাগান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সুনির্দিষ্ট সময় জানা না গেলেও ভাওয়াল রাজা রাজেন্দ্র নারায়ণ ও তার ছেলে রমেন্দ্র নারায়নের সময়ে এ নাগলিঙ্গমটি রোপণ করা হয়ে থাকতে পারে। এ হিসাবে গাছটির বয়স শতবর্ষের চেয়ে বেশি।
গাজীপুর জেলার প্রাণকেন্দ্র ভাওয়াল রাজবাড়িতে এ বিরল প্রজাতির গাছটি কালের নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও একে সর্বসাধারণ্যে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেই। নেই কোনো বংশ বিস্তারের প্রচেষ্টা।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে
ভাওয়াল রাজবাড়ির (বর্তমানে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়) ভেতরে ঢুকে দৃশ্যমান দৃষ্টিনন্দন শতবর্ষী এ গাছটি যে কারো দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। রাজবাড়ির প্রাচীরের মধ্যে জেলা প্রশাসকের দপ্তরের ঠিক পশ্চিমে সরকারি কর্মচারী সমিতির অফিস ঘেঁষে শতাব্দীর প্রাচীন এ গাছটি আজও কালের সাক্ষী হয়ে ভাওয়াল রাজাদের স্মৃতি প্রকাশ করেছে।
উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, গাছটিকে কেউ কেউ শিবলিঙ্গমও বলে থাকেন। ইংরেজিতে এর নাম Canonball বৈজ্ঞানিক নাম Couroupita guinensis গোত্র Lacythidacea. ফুলের রঙ লাল, গোলাপি আর হলুদ মিশ্রিত। আকারে বড়। পাপড়ি ছয়টি এবং তুলনামূলক ভারি। ফুলের মধ্যভাগে রয়েছে গর্ভাশয়। গর্ভাশয়টি সাপের ফণার মতো দেখতে। এর জন্যই হয়তো ফুলটির নাম ‘নাগলিঙ্গম’।
ফুল শুকিয়ে গেলে তাতে গোলাকৃতির বাদামি-খয়েরি বর্ণের ফল হয়। পত্র দীর্ঘ ও প্রশস্ত, বাকল ধূসর অমসৃণ। প্রায় সারা বছর পাতা ঝরলেও পুরোপুরি পত্রহীন হয় না কখনও। পুরো গ্রীষ্মকাল ফুল ফোটার সময়, বর্ষা ও শরতে কম ফুটলেও সারা বছরই ফুল থাকে। ফুল- দীর্ঘ, একটায় অসংখ্য কলি। নাগ ফণার মতো উদ্যত, বাঁকানো। ঠিক যেন সাপের ফণা। ফল সাদাটে মাংসল, বহুজীবী, সহজে চারা হয়, তবে বৃদ্ধি মন্থর। এই ফল হাতির পেটের রোগের জন্য উপকারী। এর অন্য নাম হাতির জোলাপ।
রাজবাড়ি ঘুরে দেখা গেছে, নাগলিঙ্গম গাছে ফুটেছে শত শত ফুল। অপরূপ সৌন্দর্য্যের পাশাপাশি সুগন্ধ ছড়াচ্ছে ফুলগুলো। এদেশে নাগলিঙ্গম গাছের দেখা খুব বেশি মেলে না। দেশে মাত্র ৫০-৫২টি এই প্রজাতির গাছ রয়েছে। প্রতি বছর মার্চ থেকে জুলাই মাসে নাগলিঙ্গম ফুল ফোটে। গাছের কাণ্ড থেকে শিকড়ের মতো বের হয়। সেই শিকড়ে ফুল ফোটে। একটি শিকড়ে অনেকগুলো ফুল থাকে। ফুলে ফুলে গাছের কাণ্ড আচ্ছাদিত হয়ে যায়।
গাছটির বয়স কত, তার সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও অনেকের মতে, এটি ভাওয়াল রাজাদের আমলে রোপণ করা। তাদের যুক্তি, গাছটির ফল যেহেতু হাতির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় এবং গাছটির অবস্থান রাজবাড়ীতে, তাই এটি ভাওয়াল রাজাদের আমলের। কারণ ভাওয়াল রাজাদের হাতি ছিল।
সুনির্দিষ্টভাবে বলা না গেলেও গাছটি অন্তত শতাব্দীকাল আগে রোপণ করা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয় প্রবীণদের। সরকারি বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে জেলা ও জেলার বাইরে থেকে অনেকে ভাওয়ালের রাজবাড়ি আসেন। তারা নাগলিঙ্গম গাছ ও এর ফুলে আকৃষ্ট হন। ছায়ার আশ্রয়ে সময় কাটান।
গাজীপুর ভাষা শহীদ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মুকুল কুমার মল্লিক দাঁড়িয়ে থাকা নাগলিঙ্গম গাছটি সম্পর্কে জানান, ভাওয়াল রাজারা প্রকৃতি ও গাছ প্রেমী ছিলেন। তাদের উদ্যোগে কয়েকটি রাজবাগান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সুনির্দিষ্ট সময় জানা না গেলেও ভাওয়াল রাজা রাজেন্দ্র নারায়ণ ও তার ছেলে রমেন্দ্র নারায়নের সময়ে এ নাগলিঙ্গমটি রোপণ করা হয়ে থাকতে পারে। এ হিসাবে গাছটির বয়স শতবর্ষের চেয়ে বেশি।
গাজীপুর জেলার প্রাণকেন্দ্র ভাওয়াল রাজবাড়িতে এ বিরল প্রজাতির গাছটি কালের নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও একে সর্বসাধারণ্যে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেই। নেই কোনো বংশ বিস্তারের প্রচেষ্টা।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে