​না খেয়ে দিন পার হচ্ছে গাজাবাসীর

আপলোড সময় : ২৬-০৭-২০২৫ ১১:৪১:৩৯ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ২৬-০৭-২০২৫ ১২:২৬:৩৮ অপরাহ্ন
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ অভুক্ত অবস্থায় দিন পার করছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। ইসরায়েলের টানা অবরোধের কারণে পুরো গাজায় দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ডব্লিউএফপি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজায় অপুষ্টি বেড়েই চলেছে। ৯০ হাজার নারী ও শিশুর জরুরি চিকিৎসা দরকার।গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে অনাহারে ভুগে অপুষ্টিজনিত কারণে নতুন করে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা ১২২ জনে পৌঁছেছে, যার মধ্যে অন্তত ৮৩ জনই শিশু।।গাজার সব সরবরাহ প্রবেশ পথের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইসরায়েল বলেছে, সাহায্য নেয়ার ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তারা অপুষ্টির জন্য হামাসকে দায়ী করেছে।

শুক্রবার ইসরায়েলের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, বিমান থেকে সাহায্য বিতরণের অনুমতি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দেয়া হতে পারে। এভাবে সাহায্য দেয়াকে যথেষ্ট নয় বলে সাহায্য সংস্থাগুলো আগে সতর্ক করেছিল। গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বৃদ্ধির মধ্যে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

শুক্রবার জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য ইসরায়েলকে ‘অবিলম্বে ত্রাণ প্রবাহের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার’ আহ্বান জানিয়েছে।এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা গাজায় মানবিক বিপর্যয় প্রত্যক্ষ করছি এবং অবিলম্বে যুদ্ধ ও মানবিক বিপর্যয় অবসানের আহ্বান জানিয়েছি। তারা বলছে, ইসরায়েলকে ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেকের মধ্যে যে পরিমাণ মতভিন্নতা, উদাসীনতা ও নিষ্ক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে-সহানুভূতি, সত্যতা ও মানবিকতার অভাব- তার মাত্রা তিনি ব্যাখ্যা করতে পারবেন না।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বৈশ্বিক সমাবেশে দেয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, “গত ২৭ মে থেকে খাদ্য পাওয়ার জন্য চেষ্টা করার সময় এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।”জাতিসংঘের নেতৃত্ব খাদ্য বিতরণের বিকল্প হিসেবে যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন বা জিএইচএফ খাদ্য বিতরণ করতে শুরু করে, তখন থেকে এসব ঘটছে।জিএইচএফ এর সঙ্গে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিষয়ক একজন ঠিকাদার অ্যান্থনি আগুইলার বিবিসিকে বলেছেন, “তিনি প্রশ্নহীনভাবেই যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হতে দেখেছেন।”তিনি জানান, তিনি দেখেছেন যে আইডিএফ ও যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা কর্মকর্তারা গোলাবারুদ, মর্টার ব্যবহার করছে এবং খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে ট্যাংক থেকে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি বর্ষণ করছে।

অবসরপ্রাপ্ত এই সৈনিক বলেন, “আমার পুরো ক্যারিয়ারে এমন মাত্রার নিষ্ঠুরতা দেখিনি। আইডিএফ ও মার্কিন ঠিকাদারদের হাতে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে ও অপ্রয়োজনীয় বলপ্রয়োগ দেখেছি।”জিএইচএফ দাবি করছে যে, এসব অভিযোগ একজন ক্ষুব্ধ সাবেক ঠিকাদারের কাছ থেকে এসেছে, যাকে অসদাচরণের অভিযোগে এক মাস আগে বাদ দেয়া হয়েছে।এদিকে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস গাজায় যুদ্ধবিরতি চায় না বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, “হামাস আসলে কোনো চুক্তি করতে চায় না। আমি মনে করি তারা মরতে চায়।”তবে হামাস যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থানে বিস্ময় প্রকাশ করেছে। গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, তারা মধ্যস্থতাকারীদের চেষ্টা সফল করতে আন্তরিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল কাতার আলোচনা থেকে তাদের দল প্রত্যাহার করে নেয়ায় নতুন যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির আলোচনা এখনো অনিশ্চ
ইসরায়েলের ঐতিহ্যমন্ত্রী আমিচায় এলিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল দ্রুত গাজা ধ্বংসের কাজ করছে এবং এই উপত্যকাকে সম্পূর্ণরূপে ইহুদিদের জন্য করে গড়ে তোলা হবে। গত বৃহস্পতিবার হারেদি রেডিও স্টেশনে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন


 

সম্পাদক ও প্রকাশক :

মোঃ কামাল হোসেন

অফিস :

অফিস : ৬/২২, ইস্টার্ণ প্লাাজা (৬ তলা), কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স, হাতিরপুল, ঢাকা।

ইমেইল :