নিমিষেই বিলীন হলো ৮ স্থাপনা

​পদ্মার সেই বাঁধে আবারও ভাঙন

আপলোড সময় : ০৮-০৭-২০২৫ ১১:৩৪:১৩ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ০৮-০৭-২০২৫ ১১:৩৪:১৩ পূর্বাহ্ন
পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতের কারণে শরীয়তপুরের জাজিরা পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝিরঘাট এলাকায় আবার নতুন করে প্রায় ১৫০ মিটার ‘কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড’ বাঁধটি  ধসে পড়েছে। নদীতে বিলীন হয়েছে পাঁচটি বসত ঘর ও তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ভাঙনের হাত থেকে বাঁচতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কমপক্ষে ১৫টি স্থাপনা। ভাঙন আতঙ্কে এখন পুরো এলাকার মানুষ।

সোমবার (৭ জুলাই) বিকালে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের ওছিম উদ্দিন মাদবরকান্দি গ্রামে ও সাত্তার মাদবর- মঙ্গল মাঝির ঘাট এলাকায় এ ভাঙন দেখা গেছে। পদ্মা নদীতে স্রোত ও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ওই এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত থেমে থেমে ভেঙেছে। ভাঙনের কারণে ওই এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। নিমিষেই স্থাপনা নিয়ে নদীগর্ভে চলে যায় ৮টি স্থাপনা।

এরপরই ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে ঘরবাড়ি ও মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন তীরবর্তী মানুষ। এর আগেও অন্তত দুইবার বাঁধটি ভাঙনের শিকার হয়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী রায়। এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। আর ভাঙন রোধে দ্রুত কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের।পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বরে নাওডোবা এলাকায় ১০০ মিটার পদ্মা সেতু প্রকল্পের ‘কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড’ বাঁধ ধসে যায়, যার পুনর্নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যয় করে ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। সেই সংস্কার করা এলাকার কিছু অংশসহ গত ৭ জুন দুটি স্থানে প্রায় ২০০ মিটার পদ্মা নদীতে ধসে পড়েছে। এক মাসের ব্যবধানে নতুন করে আরও ১৫০ মিটার এলাকা ধসে পড়ে। এতে বিলীন হয়েছে ৮টি স্থাপনা। আশপাশের বসতঘর সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে অন্যত্র। এ ছাড়া ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে শরীয়তপুরের জজিরার নাওডোবা-পালেরচর সড়ক, মহর আলী মাদবরকান্দি, আলম খাঁরকান্দি, ওছিম উদ্দিন মাদবরকান্দি এবং কালাই মোড়লকান্দি গ্রামের কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক বসত বাড়ি।

তাই অনেকেই বাঁধের কাছ থেকে বাড়িঘর ও গাছপালা সরিয়ে নিচ্ছেন। এ ছাড়া হুমকিতে রয়েছে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মঙ্গল মাঝির ঘাট বাজারের দুই শতাধিক দোকানপাট। তাই আতঙ্কে রয়েছে ওই এলাকার বাসিন্দারা। জানা গেছে, ২০১০-২০১১ সালে পদ্মা সেতু থেকে মাঝিরঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা আলমখার কান্দি জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ২ কিলোমিটার ‘কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড’ বাঁধটি নির্মাণ করে সেতু কর্তৃপক্ষ। বাঁধটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয় ১১০ কোটি টাকা। এখন পুরো বাঁধটি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী রায় বলেন, হঠাৎ ভাঙনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছি। এসে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনের দৃশ্য দেখলাম। এখানে বাঁধের বেশ কিছু অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে। অনেক দোকানপাট ও বসতবাড়ি ভাঙনের শিকার হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের তালিকা করে তাদের সরকারি সাহায্য-সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান বলেন, নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে হঠাৎ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে দ্রুত কাজ করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন
 

সম্পাদক ও প্রকাশক :

মোঃ কামাল হোসেন

অফিস :

অফিস : ৬/২২, ইস্টার্ণ প্লাাজা (৬ তলা), কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স, হাতিরপুল, ঢাকা।

ইমেইল :