
বিএনপি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ডিবি পরিচয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে ভাঙচুর, লুটপাটের অভিযোগে রাজধানীর কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামান, দুই উপপরিদর্শক (এসআই) বেলাল ও মান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সম্প্রতি গভীর রাতে কলাবাগান থানার ওসির চাঁদাবাজি, অর্থ আদায়, ভাঙচুর, লুটপাট ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকির অভিযোগের সঠিক তদন্ত ও যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ফিকামলি তত্ত্বের জনক ড. আব্দুল ওয়াদুদ। অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রথমে ওসিসহ দুই এসআইকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। পরে ডিএমপির সদর দপ্তরের সিদ্ধান্তে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম। তিনি বলেন, একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ডিএমপির সদর দপ্তর। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়, পরে দুই এসআইকে প্রত্যাহার করে রমনা বিভাগে সংযুক্ত করা হয়। পরে ডিএমপি থেকে তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
ডিএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী ড. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, কলাবাগান থানার অধীন ২২/২ সোনারগাঁ রোডের একজন স্থায়ী বাসিন্দা। গত ২৯ এপ্রিল রাত দেড়টার দিকে কলাবাগান থানার সাব-ইন্সপেক্টর বেলালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য ও ১৫/২০ জনের একদল সন্ত্রাসী আমার বাড়িতে জোরপূর্বক ঢুকে পড়ে। আমার ম্যানেজার ৯৯৯ এ টেলিফোন করলে এক গাড়ি পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়।
কিছুক্ষণের মধ্যেই শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিমের দুটি গাড়ি এসে বাড়ির সংলগ্ন মেইন রাস্তায় থামে। ম্যানেজার দেখতে পান কলাবাগান থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান নিউমার্কেট ও শাহবাগের টহল টিমকে চলে যেতে বলেন। শাহবাগ নিউ মার্কেটের টহল টিমকে সংবাদ দেওয়ার জন্য আমার এক ষাটোর্ধ্ব ভাড়াটিয়া লাল মিয়া ও নাইট গার্ড লুৎফরকে কলাবাগান থানার ওসি পুলিশের গাড়িতে তুলতে নির্দেশ দেন। যাহা আমার বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে।
এদিকে বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়া এসআই বেলালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য আমার ঘরের তৃতীয় তালার দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। গভীর রাতে সন্ত্রাসী তাণ্ডব ও দরজা ভাঙার শব্দে আশেপাশের লোকজনদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়। আমার ৯০ বছরের বৃদ্ধ মাতা ও স্ত্রী আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েন। একটি দরজা ভাঙার পর দ্বিতীয় দরজা যখন ভাঙার চেষ্টা চলছিল তখন আমি কলাবাগান থানার ওসিকে সাহায্যের জন্য মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করি। তিনি আমাকে বাড়ি থেকে পুলিশের সঙ্গে বের হয়ে আসতে বলেন। ডিবির লোক এসেছে তাদের সহযোগিতা করতে বলেন।
কোনো উপায়ান্ত না দেখে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমি পুলিশের সঙ্গে থানায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করি এবং দরজা খুলে দেই। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে এসআই বেলাল ও মান্নান আমাকে ধাক্কা মেরে আবার ঘরের ভেতরে টেনে নেয় এবং উগ্রভাবে আমার কাছে কী কী অস্ত্র আছে তা জানতে চায়। তারা বাসার মধ্যে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করেন ও কী যেন খুঁজতে থাকেন।কিছুক্ষণ পর মান্নান নামের একজন পুলিশ সদস্য আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে এক কোটি টাকা দিতে পারলে আমার থানায় যেতে হবে না। বাড়িতে রেখে যাবে। কী মামলা হয়েছে জানতে চাইলে তারা জানায় কোনো মামলা হয়নি, তারা টাকার জন্য এসেছে। যদি টাকা না দেই আমার বিরুদ্ধে ১০টা মামলা হবে। অনেক দেনদরবার করার পর আমি উপায় না পেয়ে দুই লাখ টাকা পুলিশ সদস্য বেলাল ও মান্নানের হাতে তুলে দেই। ব্যাংকিং আওয়ারের মধ্যে বাকি টাকা দেওয়ার শর্তে ৩ জন সিভিল ড্রেস পরা ব্যক্তিকে আমার পাহারায় রেখে যায়। তারা নিজেদের ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়েছে।
যাওয়ার সময় এসআই বেলাল বাড়িতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এরকম একটা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে আদায় করে ভিডিও ধারণ করে। বাড়ি সংলগ্ন আমার মিনি চিড়িয়াখানায় সরকারি লাইসেন্স নিয়ে হরিণ প্রতিপালন করে আসছি ২০০৬ সাল থেকে। নিচে নেমে দেখতে পাই সব হরিণগুলোর মুখ থেকে রক্ত ঝরছে। গভীর রাতে দরজা ভাঙার উচ্চ শব্দে হরিণ দিক-বিদিক ছোটাছুটি করায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে একটি গর্ভবতী হরিণ ওইদিন দুপুরে মারা যায়। মিনি চিড়িয়াখানার ম্যাকাও, কাকাতুয়া, ইলেকট্রিক, রেইনবো লরিসহ বিদেশি দুর্লভ ও মূল্যবান পাখিগুলো লুট হয়ে যায়।
পুলিশ কম্পিউটারের পিসি, ল্যাপটপ, সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক নিয়ে যায়। দীর্ঘ ৬ ঘণ্টাব্যাপী আইনবহির্ভূত অভিযানটি বাড়ির পাশে রাস্তায় দাঁড়িয়ে দেখভাল করেন কলাবাগান থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান। এসআই বেলালের নির্দেশে সিভিল ড্রেসে আমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত তিনজনের চোখ ফাঁকি দিয়ে আমি সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হতে সক্ষম হই।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী ড. ওয়াদুদ বলেন, এখনো সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের ভয়ে বাসায় যেতে পারছি না। টাকা না পেয়ে চাঁদাবাজদের হুমকি ধামকি চলমান আছে। অপরিচিত লোকজন বাড়ির আশপাশে ঘোরাঘুরি করছে। আমি নিরাপত্তাহীনতা ও জীবনের শঙ্কায় ভুগছি। গত ১ মে থানা থেকে ল্যাপটপটি ওসি পাঠিয়ে দিলেও বাদবাকি মালামাল এখনো ফেরত দেয়নি।
এ ব্যাপারে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, এঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন
সম্প্রতি গভীর রাতে কলাবাগান থানার ওসির চাঁদাবাজি, অর্থ আদায়, ভাঙচুর, লুটপাট ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকির অভিযোগের সঠিক তদন্ত ও যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ফিকামলি তত্ত্বের জনক ড. আব্দুল ওয়াদুদ। অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রথমে ওসিসহ দুই এসআইকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। পরে ডিএমপির সদর দপ্তরের সিদ্ধান্তে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম। তিনি বলেন, একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ডিএমপির সদর দপ্তর। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়, পরে দুই এসআইকে প্রত্যাহার করে রমনা বিভাগে সংযুক্ত করা হয়। পরে ডিএমপি থেকে তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
ডিএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী ড. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, কলাবাগান থানার অধীন ২২/২ সোনারগাঁ রোডের একজন স্থায়ী বাসিন্দা। গত ২৯ এপ্রিল রাত দেড়টার দিকে কলাবাগান থানার সাব-ইন্সপেক্টর বেলালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য ও ১৫/২০ জনের একদল সন্ত্রাসী আমার বাড়িতে জোরপূর্বক ঢুকে পড়ে। আমার ম্যানেজার ৯৯৯ এ টেলিফোন করলে এক গাড়ি পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়।
কিছুক্ষণের মধ্যেই শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিমের দুটি গাড়ি এসে বাড়ির সংলগ্ন মেইন রাস্তায় থামে। ম্যানেজার দেখতে পান কলাবাগান থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান নিউমার্কেট ও শাহবাগের টহল টিমকে চলে যেতে বলেন। শাহবাগ নিউ মার্কেটের টহল টিমকে সংবাদ দেওয়ার জন্য আমার এক ষাটোর্ধ্ব ভাড়াটিয়া লাল মিয়া ও নাইট গার্ড লুৎফরকে কলাবাগান থানার ওসি পুলিশের গাড়িতে তুলতে নির্দেশ দেন। যাহা আমার বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে।
এদিকে বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়া এসআই বেলালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য আমার ঘরের তৃতীয় তালার দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। গভীর রাতে সন্ত্রাসী তাণ্ডব ও দরজা ভাঙার শব্দে আশেপাশের লোকজনদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়। আমার ৯০ বছরের বৃদ্ধ মাতা ও স্ত্রী আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েন। একটি দরজা ভাঙার পর দ্বিতীয় দরজা যখন ভাঙার চেষ্টা চলছিল তখন আমি কলাবাগান থানার ওসিকে সাহায্যের জন্য মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করি। তিনি আমাকে বাড়ি থেকে পুলিশের সঙ্গে বের হয়ে আসতে বলেন। ডিবির লোক এসেছে তাদের সহযোগিতা করতে বলেন।
কোনো উপায়ান্ত না দেখে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমি পুলিশের সঙ্গে থানায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করি এবং দরজা খুলে দেই। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে এসআই বেলাল ও মান্নান আমাকে ধাক্কা মেরে আবার ঘরের ভেতরে টেনে নেয় এবং উগ্রভাবে আমার কাছে কী কী অস্ত্র আছে তা জানতে চায়। তারা বাসার মধ্যে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করেন ও কী যেন খুঁজতে থাকেন।কিছুক্ষণ পর মান্নান নামের একজন পুলিশ সদস্য আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে এক কোটি টাকা দিতে পারলে আমার থানায় যেতে হবে না। বাড়িতে রেখে যাবে। কী মামলা হয়েছে জানতে চাইলে তারা জানায় কোনো মামলা হয়নি, তারা টাকার জন্য এসেছে। যদি টাকা না দেই আমার বিরুদ্ধে ১০টা মামলা হবে। অনেক দেনদরবার করার পর আমি উপায় না পেয়ে দুই লাখ টাকা পুলিশ সদস্য বেলাল ও মান্নানের হাতে তুলে দেই। ব্যাংকিং আওয়ারের মধ্যে বাকি টাকা দেওয়ার শর্তে ৩ জন সিভিল ড্রেস পরা ব্যক্তিকে আমার পাহারায় রেখে যায়। তারা নিজেদের ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়েছে।
যাওয়ার সময় এসআই বেলাল বাড়িতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এরকম একটা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে আদায় করে ভিডিও ধারণ করে। বাড়ি সংলগ্ন আমার মিনি চিড়িয়াখানায় সরকারি লাইসেন্স নিয়ে হরিণ প্রতিপালন করে আসছি ২০০৬ সাল থেকে। নিচে নেমে দেখতে পাই সব হরিণগুলোর মুখ থেকে রক্ত ঝরছে। গভীর রাতে দরজা ভাঙার উচ্চ শব্দে হরিণ দিক-বিদিক ছোটাছুটি করায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে একটি গর্ভবতী হরিণ ওইদিন দুপুরে মারা যায়। মিনি চিড়িয়াখানার ম্যাকাও, কাকাতুয়া, ইলেকট্রিক, রেইনবো লরিসহ বিদেশি দুর্লভ ও মূল্যবান পাখিগুলো লুট হয়ে যায়।
পুলিশ কম্পিউটারের পিসি, ল্যাপটপ, সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক নিয়ে যায়। দীর্ঘ ৬ ঘণ্টাব্যাপী আইনবহির্ভূত অভিযানটি বাড়ির পাশে রাস্তায় দাঁড়িয়ে দেখভাল করেন কলাবাগান থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান। এসআই বেলালের নির্দেশে সিভিল ড্রেসে আমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত তিনজনের চোখ ফাঁকি দিয়ে আমি সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হতে সক্ষম হই।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী ড. ওয়াদুদ বলেন, এখনো সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের ভয়ে বাসায় যেতে পারছি না। টাকা না পেয়ে চাঁদাবাজদের হুমকি ধামকি চলমান আছে। অপরিচিত লোকজন বাড়ির আশপাশে ঘোরাঘুরি করছে। আমি নিরাপত্তাহীনতা ও জীবনের শঙ্কায় ভুগছি। গত ১ মে থানা থেকে ল্যাপটপটি ওসি পাঠিয়ে দিলেও বাদবাকি মালামাল এখনো ফেরত দেয়নি।
এ ব্যাপারে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, এঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন