রেমিটেন্সের শীর্ষস্থানীয় জেলা ফেনীতে ঈদ কেনাকাটার ধুম লেগেছে
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
২৫-০৩-২০২৫ ০৪:৩৩:৫৩ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৫-০৩-২০২৫ ০৪:৩৩:৫৩ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের শীর্ষস্থানীয় জেলা ফেনীতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ফুটপাত কিংবা অভিজাত শপিংমল সব জায়গায় পছন্দের পোশাক ও কসমেটিক কেনা-বেচার ধুম চলছে।
পরিবারের সবার কাপড় এক দোকানে পেতে ক্রেতা সাধারণ ঝুঁকছেন বাহারি নামি দামি ব্রান্ডের শোরুমগুলোতে। জেলা শহরে ছোট বড় প্রায় ১০ হাজার দোকার রয়েছে। এসব দোকানে ১ হাজার থেকে ১২ কোটি টাকা বিক্রি প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের। দোকানগুলোতে ব্যবসায়িরা পসরা সাজিয়ে বসেছে বাহারি রঙের পোশাক দিয়ে। তবে বাজার রয়েছে ভারতীয় ও পাকিস্তানি কাপড়ের দখলে। বড় বড় ব্যান্ডের দোকানের চাপে পড়েছে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। এদিকে বখাটে ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে মাঠে রয়েছে ডিবি পুলিশ ও সাদা পোষাকে পুলিশের একাধিক টিম। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে শপিংমলগুলোতে লটারীর মাধ্যমে আকর্ষণীয় পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঈদে পণ্য বিক্রি বাড়াতে গ্র্যান্ড হক টাওয়ার, শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপণি বিতান, গার্ডেন সিটি, তমিজিয়া মার্কেট, এসি মার্কেট, বড় বাজার ও শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের নামিদামি ব্র্যান্ডের শো-রুমগুলো হরেক রকম লাল, নীল বাতি আর বাহারি রকমের নজরকাড়া আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে সাজানো হয়েছে। ২০ রমজানের পর থেকে বেচাকেনায় সরগরম হয়ে উঠেছে জেলা শহরের শপিংমলগুলো। বিভিন্ন বয়সী ক্রেতারা এরইমধ্যে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাহারী সব পোষাকে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে সব বিপনিবিতানগুলো। এবার ঈদে মেয়েদের আকর্ষণীয় পোশাকের তালিকায় ভারতের চেয়ে পাকিস্তানি পোশাকের চাহিদা বেশি। আর টাঙ্গাইল শাড়ি, তাঁতের শাড়ি, জামদানি শাড়ি বিক্রি হচ্ছে বেশি।
গ্র্যান্ড হক টাওয়ার এর ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেচাবিক্রি শুরুতে কম হলেও। ১৮ রমজানের পর থেকে কিছুটা বেড়েছে। এছাড়া মার্কেটগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা কম। শহরের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামিদামি দোকানগুলোর দিকে ছুটছেন ক্রেতারা। এজন্যই আমাদের বিপনি বিতানে ক্রেতার সংখ্যা কিছুটা কম।
শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপণি বিতানের একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, রমজানের শুরু থেকে ১৮-২০ রমজান পর্যন্ত ক্রেতার সংখ্যা কম। তবে এবার বিভিন্ন পোষাক বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়েছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হবে। এসব পোষাকের দাম শুনে ক্রেতারা না কিনে দৌড়াচ্ছে।
কয়েকজন ক্রেতা অভিযোগ করেন- গত বছরের তুলনায় এ বছর জামা কাপড়ের দাম বেশি তাই তাদের বাজেট অনুযায়ী ক্রয় করতে পারছেন না।
ছকিনা আক্তার রুনা নামে এক ক্রেতা জানান, পরিবারের জন্য জামা কিনতে এসেছেন। কিন্তু অনেকগুলো মার্কেট ঘুরেছেন তার বাজেট অনুযায়ী জামা ক্রয় করতে পারছেন না। সেজন্যই বিভিন্ন মার্কেটে ছোটাছুটি করছেন বাজেট অনুযায়ী ক্রয়ের জন্য।
উম্মে তানজিলা হোসেন রিতু নামে একজন ক্রেতা জানান, তার পরিবারের ৮ জনের জন্য জামা কাপড় কিনেছেন। অনেকগুলো দোকান ঘুরেছেন জামা পছন্দ হলেও দামে হয় না। তাই অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম একটু বেশি দিয়ে কিনেছেন তিনি।
ফেনী শহর কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল বলেন, পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি কমিটির মাধ্যমে মার্কেটগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বেচাবিক্রি নিয়ে শুরুতে ব্যবসায়ীরা হতাশ হলেও ১৫ রমযানের পর থেকে বেচাবিক্রি বেড়েছে। বন্যায় ব্যবসায়ীদের যে ক্ষতি হয়েছিল আশা করছি এবছর ঈদ বাজারে বিক্রি করে কিছু অংশ পুষিয়ে উঠতে পারবে।
ফেনী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মুশফিকুর রহমান পিপুল জানান, রেমিট্যান্স খ্যাত এ জেলায় শহরে ছোট বড়, মাঝারি মিলে ১০ হাজারের বেশি দোকান রয়েছে। এসব দোকানে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে কেনাকাটা চলছে ক্রেতারা। এবারের ঈদে ১ হাজার থেকে ১২শ কোটি টাকার পণ্য কেনাবেচা হবে বলে ধারনা করছেন তিনি।
এদিকে রাস্তাঘাট ও মার্কেট গুলোতে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি ঠেকাতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান ফেনী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, মাঠে কাজ করছে সাদা পোশাকের পাশাপাশি পুলিশের একাধিক টিম। সার্বক্ষনিক পুলিশের টহল বাড়ানোসহ পুলিশ সুপার নিজেই একাধিকবার পরিদর্শন করেছেন মার্কেট ও শপিংমলগুলো।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স