ঢাকা , শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫ , ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাছের উৎপাদনেও ধসের শঙ্কা!

​পর্যটক হারাচ্ছে চলনবিল

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ৩০-০৭-২০২৫ ০৩:০৭:০৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ৩০-০৭-২০২৫ ০৩:০৭:০৮ অপরাহ্ন
​পর্যটক হারাচ্ছে চলনবিল সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
বর্ষাকালের শেষ দিকে এসেও চলনবিলে পর্যাপ্ত পানি নেই। সামান্য পানি এলেও কচুরিপানায় ভরে থাকায় বিলজুড়ে নৌকা চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। এতে মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে মৎস্য বিভাগ। অপরদিকে, পানি না থাকায় পর্যটকরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।

তিন জেলায় বিস্তৃত ৬২ বর্গমাইল আয়তনের চলনবিলের মধ্যে নাটোরের সিংড়া উপজেলাতেই রয়েছে ২৬ বর্গমাইল এলাকা। অথচ বর্ষাকালের মাঝামাঝি শ্রাবণ মাসেও সেখানে নেই পর্যাপ্ত পানি। প্রতিবছর এই এলাকায় অন্তত ১৫টি সড়ক পানিতে তলিয়ে যেত, তবে এবার সে চিত্র একেবারেই ভিন্ন।

এদিকে, পানি প্রবাহ না থাকায় চলনবিলের বেশিরভাগ এলাকা কচুরিপানায় ভরে গেছে। এতে নৌকা চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি, বিল ও সংলগ্ন নদীতে মাছ না মেলায় বিপাকে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা। বিলের কচুরিপানা সরিয়ে শুষ্ক মৌসুমে জমি চাষের জন্য কৃষকদের গুনতে হবে অতিরিক্ত অর্থ। সাত পুকুরিয়া এলাকার কৃষক আব্দুর রহিম বলেন, ‘বিলে পানি নেই, তাই মাছও নেই। প্রতিবছর বর্ষার চার মাস বিল থেকে মাছ ধরে সংসার চালালেও এখন দিনে ৩০০ টাকার মাছও পাই না।’

তৃষিখালি এলাকার বাসিন্দা খোকন জানান, ‘প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে চলনবিলে প্রচুর পর্যটক আসেন। পর্যটকদের নৌকা ভ্রমণ করিয়ে ভালো আয় হয় এখানকার নৌকার মালিকদের। সেই আশায় এবার আড়াই লাখ টাকা খরচ করে একটি নতুন নৌকা তৈরি করেছিলাম। কিন্তু এবার বিলের পানির অভাবে পর্যটক আসছেন না। ফলে আমি ও অন্যান্য নৌকা মালিকেরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছি।’

স্থানীয় সাংবাদিক রাজু আহমেদ বলেন, ‘চলনবিলে অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের ফলে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিলে সামান্য পানি এলেও প্রবাহ না থাকায় কচুরিপানায় বিল ভরে গেছে। এতে করে শুষ্ক মৌসুমে কৃষিকাজে সমস্যা হবে। জমির কচুরিপানা সরাতে অতিরিক্ত দেড় থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হবে বিঘাপ্রতি।’

বিলে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে মৎস্য বিভাগ। সিংড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন বলেন, ‘গত বছরও চলনবিলের সিংড়া অংশের উন্মুক্ত জলাশয় থেকে ৮ হাজার মেট্রিক টন মাছ আহরণ করা হয়েছে। তবে চলতি বছর এখনো পর্যাপ্ত পানি না আসায় মাছ তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পানি না এলে উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।’

আর উপজেলা প্রশাসন বলছে, পানি না থাকায় চলনবিল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন পর্যটকরা। ‘পানি না থাকায় চলনবিল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন পর্যটকরা। সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিলে পানি না থাকায় পর্যটকরা আসছেন না। এতে মৎস্যজীবীদের পাশাপাশি মাঝিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’উল্লেখ্য, প্রতিবছর উন্মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ আহরণ এবং পর্যটকদের নৌকা ভ্রমণের মাধ্যমে প্রায় পাঁচ হাজার মৎস্যজীবী ও মাঝি মিলিয়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকা আয় করেন।

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন
 


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ