ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫ , ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​‘সংকট মোকাবিলায় দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানের বিকল্প নেই’

আপলোড সময় : ৩০-০৭-২০২৫ ১১:০৬:২১ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় : ৩০-০৭-২০২৫ ১১:০৬:২১ পূর্বাহ্ন
​‘সংকট মোকাবিলায় দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানের বিকল্প নেই’ ফাইল ছবি
সংকট সমাধানে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান বাড়ানো ছাড়া কোনও উপায় নেই। জ্বালানি খাতের সামনে সাংঘাতিক সংকট দেখা দেবে। চাহিদার তুলনায় আমাদের সরবরাহ কমছে। এ অবস্থায় বাপেক্সের পাশাপাশি বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ এনে অন্তত তিন বছরের জন্য টানা অনুসন্ধানের পরামর্শ দিয়েছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেইন।  মঙ্গলবার (২৯ জুলাই)  রাজধানীর কাওরান বাজারে অবস্থিত পেট্রো সেন্টারে ‘দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা: চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ পথ- গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক একটি সেমিনারে ইজাজ হোসেইন এসব কথা বলেন।

দেশে এখন গ্যাসের চাহিদা সাড়ে চার হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু দৈনিক সরবরাহ মাত্র ২৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। ক্রমান্বয়ে এ চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় পেট্রোবাংলা আরেও বিপাকে পড়ছে। ইতোমধ্যে কয়েক দফা গ্যাসের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। বিদেশ থেকে গ্যাস আমদানি করলে অতিরিক্ত যে অর্থ ব্যয় করতে হয়, সরকারের সেই সামর্থ্য রয়েছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

দেশে গত চার বছর আগেও ২৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস স্থানীয়ভাবে সরবরাহ করা হতো। কিন্তু এখন তা প্রতিদিন ১৮০০ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে এসেছে। এর সঙ্গে দৈনিক এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি, অর্থাৎ আমদানি করা গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে। দেশের উৎপাদন দিন দিন কমছে। অপরদিকে বাড়তি এলএনজি আমদানি করার জন্য কোনও অবকাঠামো আপাতত নেই আমাদের।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেইন সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, আমাদের গ্যাসের চাহিদা এখন প্রায় ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে সরবরাহ ছিল ১৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট,  ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৬৬০ মিলিয়ন ঘনফুট। এখন আবার  তা কমে ১৮০০ মিলিয়ন ঘনফুটে এসে দাঁড়িয়েছে।  এ অবস্থায় এলএনজি সরবরাহ বাড়িয়ে তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে। এজন্য এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করা খরচ কম হলেও এলএনজি কিনতে যে পরিমাণ ডলারের প্রয়োজন পড়বে, সেটি আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য। তিনি বলেন, এ কারণে এলএনজির পাশাপাশি বাপেক্সের কাজের গতি বাড়াতে হবে৷ আবার বাপেক্সের হাতে এখনই অনেক কাজ। এমন অবস্থায় প্রয়োজনে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ এনে আগামী অন্তত তিন বছর টানা অনুসন্ধান কাজ করা উচিত।

মূল প্রবন্ধে তিনি আরও জানান, ২০৩০ সালে গ্যাসের চাহিদা গিয়ে দাঁড়াবে ৪ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট।  এরমধ্যে দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে ২ হাজার, দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে আসে ১১০০ ঘনফুট। এই দুইটি টার্মিনালের ক্ষমতা বাড়িয়ে ১০০ মিলিয়ন গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব। এরপর কমপক্ষে আরও দুইটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করা গেলে সেখান থেকে ১১৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।পেট্রোবাংলার পরিচালক (পিএসসি) মো. শোয়েব বলেন, অফশোরে গ্যাস অনুসন্ধানে আমরা এর আগে যে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছিলাম, তাতে ৬টি কোম্পানি দরপত্র কিনলেও কেউ শেষ পর্যন্ত জমা দেয়নি। কেন জমা দেয়নি সেটি জানতে আমরা একটি কমিটি গঠন করেছিলাম। সে কমিটির প্রতিবেদন এখন আমরা পর্যালোচনা করছি। পাশাপাশি অনশোরে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য মডেল পিএসসি ২০২৫ নিয়েও আমরা কাজ করছি।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রেজানুর রহমান বলেন, ভোলায় গ্যাস অনুসন্ধান কাজ বাড়ানোর পাশাপাশি আমরা ডিপ ড্রিলিংয়ে (গভীর কূপ খনন) যাচ্ছি। চারটি কুপের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে দুটির চুক্তিও হয়ে গেছে। এদিকে বাপেক্সের হাতেও এখন অনেক কাজ। আমরা এখন অনুসন্ধানেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছি। পাশাপাশি সিস্টেম লস কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।সেমিনারে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অর্থ) এ এক এম মিজানুর রহমান, পরিচালক (অপারেশন) রফিকুল ইসলাম, পরিচালক (পিএসসি) মো. শোয়েব এবং পরিচালক (পরিকল্পনা) আব্দুল মান্নান পাটওয়ারী চারটি প্রেজেনটেশন পেপার উপস্থাপন করেন। আরও বক্তব্য রাখেন ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশের (এফইআরবি) চেয়ারম্যান মো. শামীম জাহাঙ্গীর এবং নির্বাহী পরিচালক সেরাজুল ইসলাম সিরাজ।

বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন
 


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ