চীনে ভারী বৃষ্টিপাতে ৪ জনের মৃত্যু
ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় :
২৮-০৭-২০২৫ ০৩:২৪:০৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৮-০৭-২০২৫ ০৩:২৪:০৮ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
চীনের উত্তরাঞ্চলীয় হেবেই প্রদেশে অস্বাভাবিক ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসে কমপক্ষে চারজন নিহত ও আটজন নিখোঁজ রয়েছেন। সোমবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আল-জাজিরার। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ রাজধানী বেইজিং ও কমপক্ষে ১১টি প্রদেশে বন্যার সতর্কতা জারি করেছে। চেংদ শহরের কাছে একটি গ্রামে এই ভূমিধস হয়েছে। সিসিটিভি জানিয়েছে, ‘অস্বাভাবিক ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে’ ভূমিধসের সৃষ্টি হয়। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ জানিয়েছে, তারা হেবেই প্রদেশে ‘গুরুতর’ বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে একটি দল পাঠিয়েছে। প্রদেশটি রাজধানী বেইজিংয়ের চারপাশজুড়ে অবস্থিত।
গত কয়েক দিনে চীনের উত্তরাঞ্চলে বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বেইজিংয়ের মিইউন জেলায় অবিরাম বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় কর্তৃপক্ষ ৪ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে অনেক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চীনের উইচ্যাট অ্যাপে ভাইরাল হওয়া ছবিতে মিইউনের কিছু এলাকায় ভয়াবহ বন্যায় গাড়ি ও ট্রাক ভেসে যেতে দেখা গেছে। অনেক আবাসিক ভবন ডুবে গেছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে এলাকার ১০ হাজারেও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে সিসিটিভি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের উত্তরাঞ্চল রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে, যার ফলে রাজধানী বেইজিংসহ ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোতে বন্যার ঝুঁকি রয়েছে। কিছু বিজ্ঞানী চীনের উত্তরাঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধির ঘটনাকে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বলে মনে করছেন। চীনের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, আগামী তিন দিন ধরে উত্তর চীনে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ১১টি প্রদেশ ও অঞ্চলে বন্যা সতর্কতা জারি করেছে। চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, সোমবার বেইজিং সর্বোচ্চ স্তরের বন্যা সতর্কতা (রেড অ্যালার্ট) জারি করেছে। শানসি প্রদেশে, রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের ফুটেজে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকার সড়কগুলো পানিতে প্লাবিত হয়েছে ও ফসলি জমি ডুবে গেছে। চীনের ঐতিহাসিক শহর জিয়ানের আবাসস্থল এই প্রদেশে সোমবার আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশন সোমবার জানিয়েছে, তারা হেবেইকে সহায়তা করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ৫০ মিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দ করছে। এই তহবিল দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট, সেতু, পানি সংরক্ষণ বাঁধ, স্কুল ও হাসপাতাল মেরামতের জন্য ব্যবহার করা হবে।
চীন বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার্বন নিঃসরণকারী দেশ। তবে, একই সঙ্গে বৈশ্বিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তির কেন্দ্রও। দেশটি ২০৬০ সালের মধ্যে নিজেদের বিশাল অর্থনীতিকে কার্বন-নিরপেক্ষ করার ঘোষণা দিয়েছে।চলতি মাসের শুরুতে পূর্ব চীনের শানডং প্রদেশে আকস্মিক বন্যায় ২ জন নিহত এবং ১০ জন নিখোঁজ হন। একই সময়ে সিচুয়ান প্রদেশে একটি মহাসড়কে ভূমিধসে ৫ জনের মৃত্যু হয়। ওই পাহাড় থেকে কয়েকটি গাড়ি নিচে পড়ে গেলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।চীনা কর্তৃপক্ষ বৃষ্টিপ্রবণ এলাকাগুলোতে উচ্চ সতর্কতা বজায় রেখেছে। পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কা থাকায় নতুন করে বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স