ঢাকা , রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫ , ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বোয়িং থেকে ২৫ উড়োজাহাজ কিনবে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ২৭-০৭-২০২৫ ০৩:২৪:৪১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৭-০৭-২০২৫ ০৭:০৬:৪০ অপরাহ্ন
বোয়িং থেকে ২৫ উড়োজাহাজ কিনবে সরকার ফাইল ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি বোয়িং থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার জন্য অর্ডার দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। রোববার (২৭ জুলাই) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সচিবের অফিস কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

সচিব বলেন, বোয়িংয়ের ব্যবসাটা কিন্তু সে দেশের সরকার করে না, করে বোয়িং কোম্পানি। আমরা বোয়িং থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার জন্য অর্ডার দিয়েছি। যেমন ভারত দিয়েছে ১০০টি, ভিয়েতনাম দিয়েছে ১০০টি, ইন্দোনেশিয়া দিয়েছে ১০০টি। 

তিনি বলেন, বোয়িং কোম্পানি ক্যাপাসিটি অনুযায়ী এগুলো সরবরাহ করবে। সুতরাং এগুলো সরবরাহ করতে তারা অনেক সময় নেবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শুল্ক কমাতে বোয়িং থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার পরিকল্পনা। চলমান শুল্ক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাংলাদেশ উচ্চমূল্যের পণ্য কেনার কৌশল নিচ্ছে। এ ‘স্ট্র্যাটেজিক ডিল’ শেষ পর্যন্ত ওয়াশিংটনের মন জয়ে একটি কার্যকর ‘ট্রাম্পকার্ড’ হিসেবে কাজ করতে পারে বলে মনে করছেন নীতিনির্ধারকরা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বোয়িং কেনা হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করার একটি রাস্তা, তবে তা হতে হবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ নিশ্চিত করেই। বোয়িং কেনার বিনিময়ে শুল্কছাড় আদায় সম্ভব হলেও এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব, বিশেষ করে বৈদেশিক ঋণ ও মুদ্রা ব্যয় কিভাবে সামলানো হবে, তা দেখার বিষয়।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক কমাতে তৃতীয় দফা আলোচনার জন্য চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার (২৮ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেবে। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে থাকছেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমানসহ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা। 

রোববার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়ে মাহবুবুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক হার কমানোর লক্ষ্যে এই আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওয়াশিংটনে ২৯ ও ৩০ জুলাই ইউএসটিআরের (যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তর) অফিসে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সম্ভব হলে ৩১ জুলাই আরেকটি বৈঠক হতে পারে।

শুল্ক আলোচনার অগ্রগতি প্রসঙ্গে সচিব বলেন, রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ চুক্তির খসড়া পাওয়ার পর আমরা কয়েক দফায় কাজ করেছি। ওয়াশিংটনে দুই দফা সরাসরি বৈঠক হয়েছে, অনলাইনে সভা হয়েছে, আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকও করেছি। সব পক্ষের মতামত নিয়েই ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রকে চূড়ান্ত অবস্থান জানানো হয়েছে। সব খসড়ার জবাব দিয়ে আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর শুল্ক হার কমবে এবং ভারতের কিংবা ভিয়েতনামের তুলনায় বাংলাদেশের পণ্যের ওপর তুলনামূলক কম শুল্ক বসবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে দেশটি থেকে গম, তুলা এবং বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার কথা জানান বাণিজ্য সচিব। তিনি বলেন, সরকার ২৫টি বোয়িংয়ের অর্ডার দিয়েছে। এর আগেও ১৪টি বোয়িং অর্ডার ছিল। এবার রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ ইস্যুকে মাথায় রেখে অর্ডার বাড়ানো হয়েছে।

মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারি ও বেসরকারি খাত মিলিয়ে দেশে ৯ মিলিয়ন টন গম আমদানি হয়। আগে কখনও এককভাবে কোনো দেশ থেকে তা আনা হতো না। কিন্তু এখন রেড সি সংকটে সরবরাহ চেইনে পরিবর্তন এসেছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ওপর নির্ভরতা বাড়াতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির চুক্তি ইতিমধ্যেই হয়েছে। তুলার ক্ষেত্রেও তাদের কাছ থেকেই আমদানি চলছে, যদিও সেটা কিছুটা কমেছে। বেসরকারি খাত সয়াবিন তেল আমদানির পরিকল্পনা করছে, এ নিয়েও তারা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসবে।

বাংলাদেশের মার্কিন নির্ভরতা বাড়লে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হবে কি না এমন প্রশ্নে বাণিজ্য সচিব বলেন, আমরা যদি আরেকটি দেশ থেকে সুবিধাজনক পণ্য আমদানি করি, তাতে চীন বা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে টানাপোড়েন হবে না। ব্যবসায়িক বাস্তবতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ