ঢাকা , বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫ , ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​ আমে স্বাবলম্বী ভ্যান চালকরা

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ২৩-০৭-২০২৫ ০২:৪৭:৫২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৩-০৭-২০২৫ ০২:৪৭:৫২ অপরাহ্ন
​ আমে স্বাবলম্বী ভ্যান চালকরা সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
আম উৎপাদনে বিশেষ খ্যাতি আছে উত্তরের জেলা নওগাঁর। এ জেলা সারাদেশের মানুষের কাছে আমের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। জেলার সাপাহারে গড়ে উঠেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ আমের হাট। আমকে কেন্দ্র করে কৃষকের পাশাপাশি ভাগ্য বদলাতে শুরু করেছে নানা পেশার মানুষের।

সম্প্রতি সরেজমিনে সাপাহার আমের হাট ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ভ্যান, অটোরিকশা,ট্রলি এবং ভটভটটিতে করে হাটে বিক্রির উদ্দেশ্যে আম নিয়ে আসছেন চাষিরা। এতে চাষিদের সময় কম লাগার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে চালকদের। মৌসুমের ৩-৪ মাস আম পরিবহন করে বাড়তি আয় এবং ভাগ্য বদল হয়েছে বলে জানিয়েছেন চালকরা।

সাপাহার উপজেলার সদর ইউনিয়নের উচাডাঙ্গা গ্রামের ভ্যান চালক মাজেদুল ইসলাম বলেন, নিজস্ব কোন জমি না থাকায় ভ্যান চালানোকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি। আমের মৌসুমে প্রতিদিন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকার ভাড়া পাই। আম বিক্রি করতে আসায় দুপুরের খাবারটাও মালিকরাই খাওয়ায়। এমনি সময়ে দিনে ৩০০-৪০০ টাকার ভাড়া হয়। গতবছর আমের মৌসুমে সব খরচ বাদ দিয়ে ৭৮ হাজার টাকা পাইছিলাম। এবার কোনদিন ২ট্রিপ আবার কোনদিন ৩ ট্রিপ করে ভাড়া হয়। আশাকরি এ বছর গতবছরের থেকে বেশি টাকা পাব।

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার গোপীনাথপুর আলপাকা গ্রামের অটোরিকশা চালক মিরাজুল ইসলাম বলেন, বছরের অনন্য সময় শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। আমের এই ৩-৪ মাস সময়টাতে অটোরিকশা চালাই। প্রতিদিন বাজারে ২৫-২৮ ক্যারেট আম নিয়ে আসি (১ ক্যারেট=২০ কেজি)। প্রতি ট্রিপের জন্য ১ হাজার -১ হাজার ২০০ টাকা করে পেয়ে থাকি। গতবছর আমের মৌসুমে গাড়ি চালিয়ে ৯০ হাজার টাকা পাইছিলাম। ব্যাংকের কিছু ঋণ ছিলো সেগুলো পরিশোধ করছি। বাকি টাকা দিয়ে ১ টা গরু কিনেছি। আমের সময় একসাথে ভাড়ার টাকা অনেক বেশি পাওয়াই সংসারের কাজে লাগানো যায়।

পোরশা উপজেলার গাঙ্গুরিয়া ইউনিয়নের আমইড় গ্রামের অটোরিকশা চালক মনসুর আলী বলেন, এলাকায় বাগান বেশি হওয়ায় ভাড়ার চাপ এখন অনেক বেশি। প্রতিদিন চেষ্টা করি দুই ট্রিপ করে আম আনার। আমের মৌসুমে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ভাড়া হয়। গাড়ি চালানোর টাকা সঞ্চয় করে ১২ বছরের জন্য ৫ বিঘা জমি লিজ নিয়েছি। সেই জমিতে নিজস্ব বাগান করেছি। গাড়ী চালানোর পাশাপাশি বাগানেও সময় দেই এখন। বাগান থেকেও টাকা আশা শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে আগের থেকে অনেক সুখে আছি। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাপাহার পোরশা, নিয়ামতপুর এবং পত্নীতলা উপজেলার অধিকাংশ মানুষের প্রধান অর্থকরী ফসল এখন আম। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে চেষ্টা করছি কিভাবে আমকে মে-জানুয়ারি পর্যন্ত বাজারে রাখা যায়। আমের ফলে এই অঞ্চলের অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। আম পরিবহন করে অনেক ভ্যান, অটোরিকশা এবং ট্রাক চালকরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে ওই অঞ্চলের মানুষের আম কেন্দ্রিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।

বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন
 


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ