ঢাকা , মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫ , ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘হঠাৎ দেখি আগুন ধরা প্লেনটা বিল্ডিংয়ে আঘাত করছে’

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ২১-০৭-২০২৫ ০৬:১২:১০ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২১-০৭-২০২৫ ০৬:৩৫:৩৬ অপরাহ্ন
‘হঠাৎ দেখি আগুন ধরা প্লেনটা বিল্ডিংয়ে আঘাত করছে’ ​উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্ত। ছবি- সংগৃহীত
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি ‘এফ-৭ বিজেআই’ মডেলের প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। দগ্ধ ও আহত হয়েছেন শতাধিক। যাদের অধিকাংশই ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবক।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে, স্কুল ছুটির মুহূর্তে হঠাৎ বিকট শব্দে আকাশ থেকে আগুনে জ্বলতে থাকা বিমানটি স্কুল ভবনে আছড়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে পুরো ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ও হাহাকার ছড়িয়ে পড়ে।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখি আগুন ধরা প্লেনটা আমাদের বিল্ডিংয়ে আঘাত করছে। আমার এক বন্ধুই আমার চোখের সামনে মারা গেছে।’

দুর্ঘটনার সময় অনেক অভিভাবক গেটের সামনে সন্তানদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার সময় স্কুলের ‘হায়দার হল’ ভবনে প্রাথমিক শ্রেণির ক্লাস চলছিল। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে ভবনে আগুন ধরে যায় এবং দেয়াল ধসে পড়ে। এতে ওয়ান থেকে ফাইভ শ্রেণির অনেক শিক্ষার্থী পুড়ে যায় বা আটকে পড়ে।

একাদশ শ্রেণির ছাত্র হাবিবুর জানান, ‘আমি ক্লাস শেষ করে বের হয়েছি, তখন দেখি ক্যান্টিনের সামনে ভয়ংকর শব্দ আর আগুন। চারপাশে মানুষ ছুটছে।’

ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট, সেনাবাহিনী ও র‍্যাব দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধারকাজ শুরু করে।

বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিমানটি দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়ন করে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই দুর্ঘটনায় পড়ে। বিমানটিতে থাকা ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

দুর্ঘটনার পর দগ্ধদের দ্রুত জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। এছাড়া, আহতদের মধ্যে অনেককে উত্তরার আধুনিক হাসপাতালসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

জাতীয় বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, ‘দগ্ধদের বেশিরভাগই শিশু ও শিক্ষার্থী। সবার অবস্থাই গুরুতর। এখনও আহতদের আনা হচ্ছে।’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সেনাবাহিনী প্রধান, র‍্যাবের ডিজিসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষায়, ‘বিমানটি মাঠের সামনে দিয়ে এসে পেছন দিক থেকে ভবনে আঘাত করে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কেউ জানালা দিয়ে, কেউ দরজা দিয়ে বের হতে চাইছিল। অনেকেই বের হতে পারেনি।’

এই দুর্ঘটনায় একটি সরকারি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এখনও নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।


বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এইচবি/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ