আমরা চাঁদা নেব না, নিতেও দেব না: জামায়াত আমির
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
১৯-০৭-২০২৫ ০৬:৪৭:৩৬ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৯-০৭-২০২৫ ১০:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
জামায়াতে ইসলামী দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পেলে মালিক হবে না। জনগণের সেবক হবে। এ মন্তব্য করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, চাঁদা আমরা নেব না, দুর্নীতি আমরা করব না। আমরা চাঁদা নিতে দেব না, দুর্নীতি আমরা সহ্য করব না। এমন বাংলাদেশ আমরা দেখতে চাই।
শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। এদিন বিকেলে সমাবেশে বক্তব্য দেয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন জামায়াত আমীর। অসুস্থ অবস্থাতেই বক্তব্য দেন ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, আল্লাহ যত সময় হায়াত দিয়েছেন তত সময় মানুষের জন্য লড়াই করবো। ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি অর্জন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই অব্যাহত থাকবে। জামায়াতে ইসলামী যদি আল্লাহর ইচ্ছায় ও মানুষের ভালোবাসায় বাংলাদেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পায়, তাহলে মালিক হবে না, সেবক হবে।
জামায়াত আমির বলেন, আজ আমি লক্ষ্য জনতাকে সঙ্গে নিয়ে ঘোষণা দিচ্ছি, আগামী দিনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে কোনো এমপি-মন্ত্রী সরকারি প্লট গ্রহণ করবে না। কোনো এমপি-মন্ত্রী ট্যাক্সবিহীন গাড়িতে চড়বে না। নিজের হাতে কোনো টাকা চালাচালি করবে না। কোনো এমপি-মন্ত্রী যদি সরকারি বরাদ্দ পান, তাহলে কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেদন দিতে বাধ্য হবেন। এছাড়া চাঁদা আমরা নেব না, দুর্নীতি আমরা করব না। আমরা চাঁদা নিতে দেব না, দুর্নীতি আমরা সহ্য করব না। এমন বাংলাদেশ আমরা দেখতে চাই।
যুবকদের উদ্দেশে শফিকুর রহমান বলেন, তোমাদের সঙ্গে আমরা আছি। আজকে আমি এখানে জামায়াতের আমীর হিসেবে কথা বলতে আসিনি। আমি এসেছি বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের একজন হয়ে কথা বলতে।
তিনি বলেন, আমি শিশুদের বন্ধু, যুবকদের ভাই, বয়স্কদের সহযোদ্ধা, আমার বোনদের আমি ভাই। সুতরাং তাদের মুক্তির জন্যই আজকে দায়িত্ব নিয়ে আমি এখানে দাঁড়িয়েছিলাম। আল্লাহর ইচ্ছা, শরীর আমাকে সাময়িকভাবে সহযোগিতা করেনি। এটাও আল্লাহর ইচ্ছা, এখন তিনি আমাকে কথা বলার সুযোগ দিচ্ছেন। বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণীর মুক্তির জন্য আমাদের এ লড়াই নয়, রাস্তার একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী, চা বাগানের একজন শ্রমিক, রক্ত পানি করে ঘাম ঝরানো আমার একজন রিকশাচালক ভাই, মাঠে ময়দানে বাংলাদেশের মানুষের মুখে যারা একমুঠো ভাত তুলে দিতে চায় আমার সে কৃষক বন্ধু, আমি তাদের হয়ে কথা বলতে এসেছি।
‘আমার আফসোস, ২০২৪ সালে জাতিকে মুক্ত করতে যারা জীবন দিল, আমি তাদের একজন হতে পরলাম না। আমি আপনাদের কাছে দোয়া চাই, ইনসাফের বাংলাদেশ গড়ার জন্য আগামী দিনে যে লড়াই হবে, সে লড়াইয়ে আল্লাহ যেন আমাকে একজন শহীদ হিসেবে কবুল করেন, যোগ করেন জামায়াত আমীর।
শফিকুর রহমান বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে, পল্টনের গণহত্যা, শাপলা চত্বরের গণহত্যা, পিলখানার গণহত্যা, ’২৪- এর গণহত্যা-- এসব গণহত্যার বিচার বাংলার মাটিতে করতে হবে। এদের বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া শুরু না করা পর্যন্ত পুরনো ব্যবস্থাপত্রে বাংলাদেশ আর চলবে না। এতগুলো মানুষ এমনি এমনি জীবন দেননি, জীবন দিয়েছেন জাতির মুক্তির জন্য।
তিনি আরও বলেন, যদি পুরনো সব কিছু টিকে থাকত তাহলে কেন তারা জীবন দিয়েছিলেন। যারা বস্তাপচা ব্যবস্থায় বাংলাদেশকে আবার গড়তে চান তাদেরকে আমরা বলি জুলাই যুদ্ধ করে যার জীবন দিয়েছেন তাদের জীবন ফিরিয়ে দেন। আপানারা পারবেন না। যেহেতু পারবেন না কাজেই নতুন ব্যবস্থায় নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। শিশু, কিশোর যুবক, মা-বোন, শ্রমিক ছাত্র-জনতা ব্যবসায়ী সবাইকে যে সংবিধান, যে রাষ্ট্র নিরাপত্তা দিতে পারবে সে বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই।
‘২৪-এ আন্দোলনটা না হলে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলছেন তারা কোথায় থাকতেন। অতএব আসুন তাদের ত্যাগের বিনিময়ে নেয়ামত এসেছে, তা অবজ্ঞা না করি। শিশু বলে তাদের যেন তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করি। অহংকার ভরে অন্য দলকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করি। যদি এগুলো আমরা পরিহার করতে না পারি, যারা পারবেন না, তাহলে বুঝতে হবে ফ্যাসিবাদের রূপ তাদের মধ্যে নতুন করে বাসা বেঁধেছে’, যোগ করেন জামায়াত আমীর।
বাংলা স্কুপ/এইচএইচ/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স