ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫ , ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​বিশ্ববাজারে বাড়ছে বাংলাদেশের আমের কদর

নিরাপদ আম উৎপাদনে সফল দিনাজপুরের নিরঞ্জন সরকার

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ১৫-০৭-২০২৫ ০২:১৭:১১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৫-০৭-২০২৫ ০৪:৫০:৩৫ অপরাহ্ন
নিরাপদ আম উৎপাদনে সফল দিনাজপুরের নিরঞ্জন সরকার ​ছবি: সংগৃহীত
বিশ্ববাজারে বাড়ছে বাংলাদেশের আমের কদর। নিরাপদ ও মানসম্পন্ন আম উৎপাদনে ‘ফ্রুট ব্যাগিং’ পদ্ধতি এখন কৃষকদের নতুন ভরসা। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কীটনাশকমুক্ত ও দাগহীন আম উৎপাদন করে দেশীয় চাষিরা পৌঁছে দিচ্ছেন ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে। ফলে দেশের অর্থনীতিতে যোগ হচ্ছে নতুন সম্ভাবনা, আর কৃষক পাচ্ছেন ন্যায্য দাম ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

জানা গেছে, দিনাজপুর লিচু উৎপাদনে শীর্ষে থাকলেও জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে কম-বেশি আম উৎপাদন হয়। বিগত বছরগুলোয় প্রচলিত পদ্ধতিতে আম উৎপাদন হলেও এবার হিলিতে প্রথমবারের মতো ব্যবহার হচ্ছে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি। এ পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে বেশি উৎপাদন ও খরচ কম হয় এবং উৎপাদিত আম বিদেশে রপ্তানি করছেন উদ্যোক্তারা। সব ধরনের সহযোগিতা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।  মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনাজপুরের হিলির গোহাড়া গ্রামের কৃষক নিরঞ্জন সরকার ২০২৯ সালে ২০০টি গাছের চারা রোপণ করেছেন। 

বর্তমানে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে ১ একর জমিতে বারি-৪ গৌরমতি ও আম্রপালি জাতের আম চাষ করছেন। প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার) ও ক্লাস্টার ডেমোনস্ট্রেশন ফর গ্যাপ স্ট্যান্ডার্ড অব ফ্রুটস প্রকল্পের আওতায় আমবাগান করেছেন তিনি। 

ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি বলতে ফল গাছে থাকা অবস্থায় একটি নির্দিষ্ট সময়ে বা বয়সে বিশেষ ধরনের ব্যাগ দিয়ে ফলকে আবৃত করাকে বোঝায়। ব্যাগিং করার পর থেকে ফল সংগ্রহ করা পর্যন্ত গাছেই লাগানো থাকে ব্যাগটি। এ পদ্ধতিতে নিরাপদ, বিষমুক্ত ও রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন করা যায়। এ ছাড়া বালাইনাশক ব্যবহার ছাড়াই শতভাগ রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণমুক্ত আম পাওয়া সম্ভব। ব্যাগিং করলে বালাইনাশকের ব্যবহার কমবে ৭০-৮০ শতাংশ। যেকোনো জাতের আমের ত্বক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও হলুদাভ করা যায় এবং আমের সংরক্ষণকাল বাড়ানো যায়, যা রপ্তানির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

আমের ফলন ভালো হয়েছে। দেশের পাশাপাশি ইউরোপ কান্ট্রিতে এই আম রপ্তানি কছেন কৃষক নিরঞ্জন সরকার। এখন পর্যন্ত তিনি ৪৫০ কেজি আম রপ্তানি করেছেন। যা থেকে তার আয় হয়েছে বড় অঙ্কের টাকা। নিজের আয়ের পাশাপাশি তার বাগানে কাজ করে আয় করছেন অনেক বেকার যুবক। নতুন পদ্ধতিতে আম উৎপাদন দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন অনেকেই। প্রতি বছর তিনি এই আম বাগান থেকে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা আয় করছেন। সেই সঙ্গে এলাকার বেকার যুবকরা কাজ করে সংসার পরিচালনা করার সুযোগও পাচ্ছেন। 

কৃষক নিরঞ্জন সরকার বলেন, গ্যাপ ও পার্টনার প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথমে আমি প্রশিক্ষণ নেই। পরে প্রকল্পের আওতায় আমবাগান করি। আবহাওয়া ভালো থাকায় আমের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সহযোগিতায় আমি আম বিদেশে বাজারজাত করছি। 

এদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম বলেন, চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো পার্টনার প্রকল্পের আওতায় আম চাষ প্রদর্শনী বাস্তবায়ন হচ্ছে। বাগানের মাটি ও পানি পরীক্ষা থেকে শুরু করে কখন, কোনো বালাইনাশক স্প্রে করতে হবে, সব বিষয়ে কৃষককে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে নিয়মিতভাবে তার বাগান মনিটরিং করা হচ্ছে। 

 
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ