প্রেম করে বিয়ে করায় বর্বর শাস্তি
নবদম্পতিকে জোয়ালে বেঁধে হালচাষ করাল গ্রামবাসী
ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় :
১৩-০৭-২০২৫ ০৩:০৩:৫৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৩-০৭-২০২৫ ০৭:৪৬:০৮ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
ভালোবাসার অপরাধে এবার শাস্তি হলো পশুর মতো ব্যবহার। ভারতের ওড়িশার রায়গড়া জেলার কাঞ্জামাঝিরা গ্রামে প্রেম করে বিয়ে করায় এক নবদম্পতির ঘাড়ে গরুর জায়গায় জোয়াল চাপিয়ে হালচাষ করানোর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা দেশজুড়ে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ঘটনার ভিডিও দেখে দেশজুড়ে উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়। খবর এনডিটিভি
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের দুই যুবক-যুবতী দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন। সম্প্রতি তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু তাদের এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি গ্রামের মানুষজন। কারণ ছেলেটি মেয়েটির ফুফাতো ভাই যা ওই অঞ্চলের সামাজিক রীতিনীতির পরিপন্থী বলে মনে করা হয়। একে ‘পাপ’ হিসেবে চিহ্নিত করে গ্রামবাসী তাদের বাড়ি থেকে জোর করে বের করে এনে মাঠে নিয়ে যায়।
এরপরই ঘটে অমানবিক দৃশ্য। নবদম্পতির ঘাড়ে জোয়াল চাপিয়ে, পশুর মতো ব্যবহার করে তাদের দিয়ে হালচাষ করানো হয়। শুধু তাই নয়, পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা গ্রামবাসীরা ছড়ি ও দড়ি দিয়ে তাদের আঘাত করে, যেন তারা গরু বা বলদ। মাঠে এই অপমানজনক ঘটনার সময় কেউ কেউ হাসছিলেন, আবার কেউ হাততালি দিচ্ছিলেন।
ঘটনার এখানেই শেষ নয়। মাঠে এই হেনস্তার পরে নবদম্পতিকে টেনে হিঁচড়ে গ্রামের মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের উপর তথাকথিত "পাপমোচনের" শুদ্ধীকরণ আচার পালন করা হয়।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেটিজেনরা। অনেকে এই ঘটনাকে ‘বর্বরতা’, ‘অমানবিক’, ও ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
ঘটনার গুরুত্ব উপলব্ধি করে দ্রুত পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন। রায়গড়ার পুলিশ সুপার এস স্বাতী কুমার জানিয়েছেন, পুলিশ গ্রামে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং স্বতঃপ্রণোদিতভাবে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, একই জেলার রায়গাদা এলাকায় চলতি বছরের জানুয়ারিতেও ঘটে আরেকটি জাত-বর্ণবৈষম্যমূলক ঘটনা। সেখানে ভিন্ন বর্ণের ছেলেকে বিয়ে করায় এক নারীর পরিবারকে বাধ্য করা হয় মন্দিরে গিয়ে মাথা ন্যাড়া করতে।
এই ধরনের ধারাবাহিক সামাজিক নিপীড়ন ভারতীয় সমাজে এখনো কতটা গভীরভাবে গেঁথে আছে, তা আবারও প্রমাণিত হলো এই ঘটনার মধ্য দিয়ে।
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স