ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫ , ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ, প্রতিবেদকের বক্তব্য

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৭-০৭-২০২৫ ০১:০৬:২৫ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৭-০৭-২০২৫ ০১:০৯:১৬ অপরাহ্ন
​প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ, প্রতিবেদকের বক্তব্য ​ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির লোগো। সংগৃহীত
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)। বাংলা স্কুপে 'বহাল তবিয়তে দুর্নীতিবাজরা, বিদ্যুৎ উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটির তথ্যসমূহের যথার্থতা নেই দাবি করে একটি প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছে সংস্থাটি।

বুধবার (২ জুলাই) ডিপিডিসির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (এইচ আর) শামীমুল হক স্বাক্ষরিত প্রতিবাদলিপিটি পাঠানো হয়। গত ২০ মে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছিল বাংলা স্কুপ। 

ডিপিডিসির প্রতিবাদলিপিটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-
উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, আপনার অনলাইন পোর্টালে ২০ মে ২০২৫ তারিখে 'বহাল তবিয়তে দুর্নীতিবাজরা, বিদ্যুৎ উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা' শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)-এর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। উক্ত প্রতিবেদনে ডিপিডিসি-এর বিভিন্ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে, তা বিভ্রান্তিকর, তথ্যগতভাবে অসত্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপপ্রয়াস বলে আমরা মনে করি।

প্রথমত, ডিপিডিসি একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে বিদ্যুৎ বিতরণ ও গ্রাহক সেবায় নিয়োজিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আমাদের নিজস্ব নিরীক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। যেকোনো অভিযোগ পাওয়ার পর যথাযথ প্রশাসনিক ও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা পর্যালোচনা করা হয়।

দ্বিতীয়ত, সংবাদে যেসব কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করা হয়েছে, তাঁদের অনেকে বর্তমানে ডিপিডিসি-তে কর্মরত নন বা ইতোমধ্যে অবসরে গেছেন। এরপরও তাঁদের নাম তুলে ধরে ভিত্তিহীন অভিযোগের মাধ্যমে মানহানিকর বার্তা প্রদান করা হয়েছে, যা ব্যক্তি অধিকার ও প্রতিষ্ঠানের মর্যাদার পরিপন্থী।

তৃতীয়ত, বিদ্যুৎ খাতে গত কয়েক বছর ধরেই জবাবদিহি ও শুদ্ধাচার বাস্তবায়নে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। ডিপিডিসি ও সরকারের এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্দিষ্ট নীতিমালার মধ্যে কার্য সম্পাদনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অভিযোগ থাকলে তা নির্দিষ্ট সংস্থা যেমন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা উচিত, সংবাদপত্রের মাধ্যমে একতরফাভাবে তা প্রচার করা উচিত নয়।

চতুর্থত, উক্ত প্রতিবেদনে "দোসর", "ছেলেখেলা", "দুর্নীতির সিন্ডিকেট", "দক্ষিণার বিনিময়ে বদলি" এ ধরনের শব্দচয়ন চরমভাবে আপত্তিকর ও অপেশাদার। এসব শব্দ সরকারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও কর্মীদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত সম্মানকে ক্ষুণ্ণ করে এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।

পঞ্চমত, ডিপিডিসির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশিত একতরফা অভিযোগে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে, যা সরাসরি জনস্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সেবার মান নিয়ে অহেতুক সংশয় তৈরি করে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার মতো স্পর্শকাতর খাতে বিপজ্জনক প্রভাব বিস্তার কাম্য নয়।

আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, উক্ত প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্যসমূহের যথার্থতা নেই এবং তা ডিপিডিসি ও এর কর্মকর্তাদের সামাজিক ও পেশাগত মর্যাদার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

অতএব, ডিপিডিসি এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং দাবি করছে যে, আপনার পত্রিকার পরবর্তী আপডেটে এই প্রতিবাদলিপিটি হুবহু প্রকাশ করা হবে, যেন পাঠক সমাজ প্রকৃত চিত্র সম্পর্কে অবগত হতে পারেন।

আমরা প্রত্যাশা করি, ভবিষ্যতে আপনার পত্রিকায় ডিপিডিসি সংক্রান্ত কোনো সংবাদ পরিবেশনের পূর্বে এর বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে সংবাদ পরিবেশন করা হবে এবং এর মাধ্যমে গণমাধ্যমের বর্তমান স্বাধীনতা যেন সততা, ভারসাম্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত থাকে-এই প্রত্যাশা কামনা করছি।


প্রতিবেদকের বক্তব্য
ডিপিডিসির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন বাংলাস্কুপের প্রতিবেদক। তাঁর দাবি, প্রতিবেদনে কোনো অসত্য বা বিভ্রান্তকর তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ওই প্রতিবেদনে একাধিক বিদ্যুৎ বিতরণী সংস্থার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের তথ্য তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদক বলছেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী পরিষদের পাঠানো চিঠি ও নথির সূত্র ধরে প্রতিবেদনটি করা হয়েছে। ওই চিঠিতে ডিপিডিসির দুর্নীতিগ্রস্ত বোর্ড পরিচালক ও কর্মকর্তাদের নিয়ে গত ১৫ বছর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যবহুল প্রতিবেদন সংযুক্ত করে তাঁদের অপসারণ ও শাস্তির দাবি জানানো হয়েছিল। পরবর্তীতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের কাছে পুরো বিষয় তুলে ধরার পরই তিনি বাংলা স্কুপকে তাঁর বক্তব্য জানিয়েছিলেন। 

বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ