পিজিসিবিতে এমডি নিয়োগ
প্রার্থী তালিকায় স্থান পেয়েছে স্বৈরাচারের দোসররা!
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
১৩-০৫-২০২৫ ০৬:২০:৩৫ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৩-০৫-২০২৫ ০৬:২১:০০ অপরাহ্ন
গ্রাফিক্স : বাংলাস্কুপ
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পতিত স্বৈরাচার সরকারের মদদপুষ্ট প্রকৌশলীকে নিয়োগের জন্য তোড়জোড় চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রার্থীদের মধ্যে আবার একজন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের সদ্যবিদায়ী সিনিয়র সচিবের নিকটজন। যিনি বর্তমানে ঢাকার একটি বিদ্যুৎ বিতরণী কোম্পানিতে নির্বাহী পরিচালক (অপারেশন) পদে কর্মরত রয়েছেন। এদিকে পিজিসিবি সূত্র বলছে, প্রার্থী বাছাই তালিকায় সাবেক সরকারের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর ঘনিষ্ট কয়েকজন থাকায় নিয়োগের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত শনিবার (৩ মে) প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ের বোর্ডরুমে প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় অংশ নিতে দশ জন প্রার্থীকে ভাইভা কার্ড পাঠানো হয়।
তাঁরা হলেন- শেখ জাকিরুজ্জামান, কিউ. এম. শফিকুল ইসলাম, এস.এম. ওয়াজেদ আলী সরদার, মোহাম্মদ শহীদ হোসেন, মো. আব্দুর রৌফ মিয়া, বি.এম. মিজানুল হাসান, মো. জসিম উদ্দিন ভূইয়া, মো. রোকনুজ্জামান, আবদুর রশিদ খান ও মোহাম্মদ তারিকুল হক। তবে এদের মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেন নয়জন।
যোগাযোগ করা হলে পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক মো. আনোয়ারুল ইসলাম (এইচআর) মঙ্গলবার (১৩ মে) বাংলা স্কুপকে বলেন, প্রায় ২০ জন আবেদনকারীর মধ্যে দশজনের ভাইবা কার্ড আমরা ছেড়েছি। নয়জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। আমার জানামতে, এখানে স্বৈরাচার সরকারের মদদপুষ্ট কোনো প্রকৌশলীকে নিয়োগ পরীক্ষায় ডাকা হয়নি। আমরা খুব স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রার্থীদের আবেদন বাছাই করেছি, যা সরাসরি পিজিসিবির পরিচালনা পর্ষদ দেখভাল করেছে।
তিনি আরো বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পিজিসিবির একটি অংশে আমাদেরই এক সাবেক প্রধান প্রকৌশলী দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি বিতরণী কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। সাবেক স্বৈরাচার সরকারের কোন সচিবের সঙ্গে তাঁর সখ্য ছিল কি ছিল না, তা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। আজ আমরা প্রার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল ও অন্যান্য নথি সুপারিশ আকারে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবের কাছে পাঠিয়েছি। কাকে নিয়োগ দেয়া হবে, তা মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বর্তমানে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রশিদ খান একজন দক্ষ কর্মকর্তা। দীর্ঘদিন তিনি এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। হয়ত মন্ত্রণালয় তাঁর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
প্রার্থীদের কয়েকজনের অভিযোগ, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেয়ার জন্য একটি মহল উঠেপড়ে লেগেছে। এ কারণে প্রার্থীদের আবেদনের যাচাই-বাছাইয়ে পক্ষপাত করা হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপিমনা দক্ষ প্রকৌশলী থাকলেও ওই মহলটির সঙ্গে তারা পেরে উঠছেন না।
পিজিসিবি বাংলাদেশের একমাত্র বিদ্যুৎশক্তি সঞ্চালন প্রতিষ্ঠান। সরকারি এই সংস্থাটি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ গ্রিডগুলো নির্মাণ ও পরিচালনা করে থাকে। রাষ্ট্রের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদটি সংশ্লিষ্টদের কাছে সম্মানজনক ও লোভনীয়। এখানে সৎ ও দক্ষ প্রকৌশলী নিয়োগ না হলে ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমে জটিলতা তৈরি হতে পারে। যা বিদ্যুৎ খাতকে প্রভাবিত করতে পারে।
বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স