পাবনার ঈশ্বরদীর পদ্মাপাড়ে মেগা প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবস্থান। এই প্রকল্পের বিভিন্ন খাতের ব্যয় নিয়ে নিজের সরেজমিন অভিজ্ঞতাকে ‘ফ্যান্টাসি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের পাশাপাশি সীমিত সম্পদের অপচয়’— হিসেবে অভিহিত করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। রোববার (৪ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন উপদেষ্টা।
পোস্টে তিনি প্রায় একই ধরণের একটি ভারতীয় প্রকল্পের উদাহরণ টেনে লেখেন, ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘুরে এলাম। প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় ১৩.৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর তুলনায় ভারতের কুদানকুলাম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতা ৬০০০ মেগাওয়াট, যা দেড় গুণেরও বেশি।
উপদেষ্টার মতে, নির্মাণ ব্যয় ও নির্মিত প্রতিষ্ঠান একই হলেও এর সার্বিক প্রাপ্ত ফলাফলে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। এ সময় রূপপুর প্রকল্পে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা চলমান ইস্যুকেও উল্লেখ করেন তিনি।
তবে প্রশ্ন রাখেন দুর্নীতির বাইরেও এত বড় মেগা প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতের ব্যয়ের যৌক্তিকতা নিয়ে। লেখেন, ঈশ্বরদী থেকে রূপপুর পর্যন্ত একটি রেললাইন নির্মাণে খরচ হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা। এই রেললাইনের শেষপ্রান্তে রূপপুর স্টেশনে বানানো হয়েছে মাত্র ৭ কক্ষের একটি গেস্ট হাউস। অথচ রেললাইনটি আজও ব্যবহার হয়নি, ভবিষ্যতেও ব্যবহারের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
পোস্টের শেষে উপদেষ্টা দেশের অর্থনীতির সাপেক্ষে খরচ ও কার্যকারিতা বিবেচনায় বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করার বার্তা দেন। বলেন, দুর্নীতি নজরে আনার পাশাপাশি, আমাদের আরও বেশি করে মনোযোগ দিতে হবে প্রকল্পের কাঠামো, খরচ ও কার্যকারিতা যাচাইয়ে। সীমিত সম্পদ দিয়ে ফ্যান্টাসি প্রকল্প বানানোর খেসারত যেন দেশের মানুষকে না দিতে হয়।
উল্লেখ্য, শনিবার ঈশ্বরদীর রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা এবং টাওয়ারসহ গ্রিড লাইনের সকল কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা।
বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন